Wellcome to National Portal
Main Comtent Skiped

Title
ওস্তাদ কালীপদ দাস স্বাধীনতা পদক ২০২০ –এ ভূষিত হওয়ায় খুলনার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষ গর্বিত
Details

ওস্তাদ কালীপদ দাস স্বাধীনতা পদক ২০২০ –এ ভূষিত হওয়ায় খুলনার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষ গর্বিত

বীর মুক্তিযোদ্ধা কালীপদ দাস একজন খ্যাতনামা সঙ্গীতজ্ঞ। ওস্তাদ কালীপদ দাস নামেই তিনি খুলনাঞ্চলের মানুষের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। খুলনার খালিশপুরের বড় বয়রা এলাকায় ১৯৩২ সালের ১লা মার্চ  তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন ডিপ্লোমা কৃষিবিদ।

৬ বছর বয়সে তার পিতৃবিয়োগ হয়। কীর্ত্তনের দলে তার দাদু করতাল এবং বাবা শ্রীখোল বাজাতেন। সেইসূত্রেই সঙ্গীতের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয় তার। কিন্তু অর্থাভাবে কিশোর বয়সে তার পক্ষে সে সময় সঙ্গীত শেখা সম্ভব হয়নি। তাই, যাত্রাদলে সখীনৃত্যে অংশ নেন। পরে অবশ্য ভাষাণ যাত্রা থিয়েটার ও যাত্রাদল পরিচালনা এবং নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। এ সময় অনেক বিশিষ্ট অভিনেতার সঙ্গে তার অভিনয় করার সুযোগ ঘটে।

অপেক্ষাকৃত বেশী বয়সে অর্থাৎ ১৯৫০ সালে বর্তমান বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পড়ার সময় সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি হয়। ১৯৫৩ সালে খুলনা জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রয়াত সাধন সরকারের সুরে আধুনিক গান গেয়ে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের পর সাংস্কৃতিক মজলিস, নয়া সংস্কৃতি সংসদ, অগ্রণী শিল্পী সংসদ, (প্রয়াত চিত্রাভিনেতা ও আবৃত্তিকার গোলাম মোস্তফা এর সদস্য ছিলেন), পাকিস্তান আর্ট কাউন্সিল, তরুণ সংঘ, সন্দীপন, পরাবাত ইত্যাদি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য এবং নিজের প্রতিষ্ঠিত (১৯৬৫) সংগঠন সুর বিতানের সাধারণ সম্পাদক ও অবৈতনিক অধ্যক্ষ ছিলেন।

১৯৭০ সাল থেকে অর্থাৎ খুলনা বেতারের যাত্রা শুরুর দিন থেকে নজরুল সঙ্গীত ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের শিল্পী ১৯৭৩ সাল থেকে উক্ত বেতার কেন্দ্রের সঙ্গীত পরিচালক ও প্রযোজক, কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও কথক এবং চিঠিপত্রের উত্তরদাতাসহ নানা ভাবে জড়িত।

শব্দ সৈনিক হিসেবে তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম শিল্পী সংস্থার সহকারী সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চলের শরণার্থী শিবিরে, পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে, কলকাতা ও দিল্লীতে রূপান্তরের গানসহ বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান পরিবেশন করে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে জনমত গঠনে সহায়তা করেন।ওস্তাদ কালীপদ দাস স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানের শিল্পী।

স্বাধীনতার পর স্কুল অব মিউজিক, উদীচী, ক্রান্তি, ভৈরবী প্রভৃতী সংগঠনের সঙ্গীত প্রশিক্ষক এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত খুলনা জেলা সঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সাধরণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৮ সালে অংকুর সাংস্কৃতিক একাডেমি, ঢাকা কর্তৃক সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৯৪ সালে একতারা শিল্পী গোষ্ঠী কর্তৃক সম্মাননা ও ১৯৭৭ সালে মিজানুর রহিম স্মৃতি পুরস্কার পান তিনি।

তিনি ছিলেন খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি, স্কুল অব মিউজিক, গণ শিল্পী সংস্থা, জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, খুলনা নাগরিক সমাজ ইত্যাদি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সক্রিয় সদস্য এবং সঙ্গীত প্রশিক্ষক হিসেবে যুক্ত। বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের সঙ্গীত শিক্ষার আসরের পরিচালক।

৩৪ বছর যাবৎ চাকরী করার পর ১৯৮৮ সালে খুলনা মেট্রোপলিটন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এই গুণী সঙ্গীতজ্ঞ।তিনি কণ্ঠ সঙ্গীতে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা ২০১৩ লাভ করেন।

Attachments
Image
Publish Date
26/02/2020
Archieve Date
26/03/2021